যেভাবে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বিপুল সৈন্যবাহিনী থাকা সত্ত্বেও ভিতরের বিশ্বাসঘাতক মিরজাফরদের কারণে পরাজিত হয়েছিলেন, ঠিক আজকের বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট যেন সেই ইতিহাসের ভয়াবহ পুনরাবৃত্তি!
সেই পলাশীর যুদ্ধে যেমন ইংরেজরা "ব্যবসার আজ" এসে শাসনের খুঁটি গেড়ে দিয়েছিল, ঠিক তেমনই আমেরিকা তার বন্ধুত্বের মুখোশে নতুন এক আধিপত্যের শিকল পরাতে চায় বাংলাদেশকে। গোপালগঞ্জের নীরবতা যখন বজ্র নীরবতায় পরিণত হয়, তখনই ইতিহাস বলে—Chat ভয়াবহ চুক্তি জনগণের অগোচরে সম্পন্ন হয়েছে। কী সেই চুক্তির শর্ত? কেন তা গোপন? জনগণের হাতে কেন নেই সেই তথ্যে প্রবেশাধিকার?
আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক নতুন পলাশীর প্রান্তরে। দেশের অভ্যন্তরে জন্ম নিয়েছে একাধিক মিরজাফর। যারা নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে, নিজেদের বিদেশি প্রভুদের খুশি করতে জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। ঢাকায় যেভাবে একটি কথিত আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের নামে বাংলাদেশকে পগরিণত করা হলো একটি গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাঠে, সেটি নিছক চুক্তি নয়—এটি একটি জাতীয় আত্মসমর্পণ।
আমরা কি জানি না, আফ্রিকার বহু দেশ—দক্ষিণ সুদান, বুরুন্ডি, সোমালিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া—সবাই মার্কিন আগ্রাসনের "সহযোগী চুক্তির" মাধ্যমে কীভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে? সেখানে মার্কিন বাহিনী, কনসালট্যান্ট, থিংক ট্যাংক, এনজিও আর সামরিক অফিসাররা কিভাবে গোঁজামিল দিয়ে দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং নিরাপত্তাকে একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে? আর সেই একই মডেল আজ আমাদের দেশেও বসাতে চায় এই ইউনুসীয় চক্র, তথাকথিত কিংস পার্টি এবং বিদেশী দালালদের সমন্বয়ে গঠিত এই ছায়া-রাষ্ট্র।
আঞ্চলিক অফিস খুলে দেওয়া মানে হচ্ছে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব খণ্ডিত করা। মানে হচ্ছে, আগামীতে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে বাইরের শক্তির নজরদারি প্রতিষ্ঠিত হওয়া। মানে হচ্ছে, আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী, প্রশাসন—সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে একটি বিদেশি ব্যবস্থার ছায়া কার্যকর হওয়া।
এমনকি পাশের দেশ মিয়ানমার, যেখানে সামরিক জান্তা সরকার আছে, সেখানেও এই আঞ্চলিক অফিস করতে দেয়নি তারা। তারা বুঝেছে—একবার ঢুকতে দিলে, আর বের করা যাবে না। অথচ বাংলাদেশ, যাদের ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য রক্ত ঝরেছে, সেই দেশের শাসকরা আজ এই দেশকে ফের একবার উপনিবেশ বানাতে মুখিয়ে!
এই চুক্তির পরিণতি হবে ভয়াবহ। এর অর্থনীতি, কূটনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তিতে যে বিপর্যয় ডেকে আনবে, তা এখনো অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী—এই ধরনের চুক্তির পর কখনো কোনো দেশ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
এখনই সময়, আমরা প্রতিবাদ করি। জাতিকে জাগিয়ে তুলি। শহর থেকে গ্রামে, ক্যাম্পাস থেকে কারখানায়, প্রত্যেক সচেতন নাগরিককে বলতে হবে—বাংলাদেশ কোনো ল্যাবরেটরি নয়। এই দেশ কোনো বিদেশি প্রজেক্টের পরীক্ষার মাঠ নয়।
পলাশীর মিরজাফরদের যেমন ইতিহাস ক্ষমা করেনি, আজকের বিশ্বাসঘাতকরাও রেহাই পাবে না। আজ আমাদের কণ্ঠে থাকতে হবে বজ্রের মতো আওয়াজ—না, আর নয়!
বাংলাদেশ কারো করুণার দেশ নয়। বাংলাদেশ যুদ্ধ করে অর্জিত, রক্তে গড়া স্বাধীন ভূখণ্ড। একে আধিপত্যবাদী চক্রান্তের সামনে মাথানত করতে দেওয়া হবে না।
আজকের এই প্রতিবাদ হোক আগামী প্রজন্মের জন্য রক্ষাকবচ।
জয় বাংলা,
জয় স্বাধীনতা।
সোর্স: এফবি
Post a Comment