নীল রক্ত


নীল রক্ত
পর্ব_১

সেদিনের ল্যাং*টা পোলা নাকি আমার বর,তার জন্য আমি বউ সেজে বসে আছি,
আমার থেকে ৬ বছরের জুনিয়র আমার বর,এইদিকে বিদ্যুৎ নেই গরমে আমি অস্থির, ভাবলাম শাড়িটা চেন্স করে নেই,
তাই শাড়ি,ব্লাউজ, পেটিকোট খোলে থ্রিপিস পরবো এমন টাইমে দরজা ঠেলে,
পিচ্ছিটা রুমে প্রবেশ করলো,
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি অন্ধকারে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে আসলো,
পিচ্ছিটা আমাকে এই অবস্থায় দেখে চিৎকার দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়,
এখন মনে মনে ভাবছি যদি বাহিরে গিয়ে সবাই কে বলে দেয় বউ কে এই অবস্থায় দেখছি তাহলে কি বলবে
মানুষজন,

আমি তারাতাড়ি করে জামাকাপড় পড়ে
রুম থেকেই দরজা দিয়ে বাহিরে উঁকি দেই দেখি পিচ্ছি জামাইটা
দাঁড়িয়ে আছে যাক বাঁচা গেলো বাবা পর্যন্ত যায়নি,
আমি আর দেড়ি না করে শার্টের কলার টা ধরে রুমে নিয়ে আসি,
বেচারা বার বার বলছে আপু আমারে ছাইড়া দেন আপু আমারে ছাইড়া দেন,

আমি- চুপ আপু কারে কস আমি তোর বউ লাগি নাম ধরে বল,

বর-আপনি আমার বড় আপনাকে আপুই বলবো,

আমি- আরে গাধা বউকে আপু বলতে হয় না,আমাকে আপু তোর উপর প্লাস্টিকের ঠাডা পড়বো,সরি তোমাকে তুই বলে ফেলছি,

বর- তাহলে বউ আপু বলে ডাকি,

আমি- চুপ (শুনে হাসি পাচ্ছে)
শুধু রিতু বলে ডাকবে কেমন,

বর-রিতু আপু,

রিতু-আবার (রেগে) অনলি রিতু রিতু,

বর- রাগ দেখান কেন, ভালো ভাবে বললে কি হয়,

রিতু- ওরে আমার গুলুমুলু জামাই রিতু রিতু বলে ডাকবা কেমন,

বর- আপনি আমাকে খেপাচ্ছেন কেনো,

রিতু- কি?
বর- স্কুলে থাকতে আমার এক বান্ধবী খেপাতো আর আপনিও,

রিতু- এই পিচ্ছি সালা টা কে নিয়ে পড়লাম মহা যন্ত্রণায়,

বরের নাম মোঃ নীল মাহমুদ, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান কিন্ত নীলের বাবা মা কেউ বেঁচে নেই, একটি সড়ক দুর্ঘটনায় উনারা দুজনেই মারা যায় প্রায় একবছর আগে,
এতদিন নীল তার দাদুর কাছে ছিলো কিন্ত দাদু একদিন ভালো থাকলে
৭দিন অসুস্থ থাকে নীলের শক্তপোক্ত একটা support দরকার যে নীল কে আগলে রাখবে,চারি দিকে শত্রুর অভাব নেই,
আমার বাবা রহিম চৌধুরী ছিলেন নীলের বাবার খুব ভালো বন্ধু,
তাই তো তার বন্ধুর ছেলের জন্য নিজের মেয়ের এমন অবস্থা,
কিন্ত রিতুর মাথায় একটা জিনিস কিছুতেই ঠুকছে না, সেটা নীলের বাবা এত ছোট একটা কোম্পানির মালিক কিন্ত বাড়ি দেখে মনে হয় কোটি কোটি টাকার মালিক,
যাই হোক এই সব ভেবে আমার লাভ কি,
তো পিচ্ছি ছেলেটা খাটের এক পাশে জড়সড় হয়ে শুয়ে পড়লো,

রিতু মনে মনে, হাইরে কপাল আমার
বাসর রাতে নতুন জামাই নতুন বউরেখে ঘুমাচ্ছে,

রিতুও শুয়ে পড়লো কিন্ত ঘুম আসছে না,
অনেকক্ষণ হয়ে গেলো ঘুমের কোন
নাম গন্ধ নেই,

এদিকে নীল নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে,

রিতু- এই এই শুনছো, এই এই ডাকের কোন সাড়া বা শব্দ নেই,
আমি যে ডাকছি তার কোন খেয়াল নেই।

রিতু বিরক্ত হয়ে নীলের পাছায় দিলো এক লাথি।

নীল গড়িয়ে খাটের নিচে পড়ে গেলো আর হাউমাউ করে চেঁচিয়ে উঠলো,

নীল- এটা কি হল?আপনি আমাকে
লাথি দিলেন কেনো,

রিতু- আমি ডাকলাম শুনলে না কেনো,
আচ্ছা তুমি দেখতে বোকার মতো কিন্ত তোমাকে বোকা মনে হয় না কেনো,

নীল- এই কথা বলার আপনি আমার ঘুম ভাঙালেল,

রিতু- না, আমার ঘুম আসছে না চল লুডু খেলি,তোমার ফোনে লুডু আছে না,

নীল- না আমার ফোনে লুডুফুডু নেই,(রেগে)..

রিতু- পিচ্ছি পোলার রাগ কতো, আমার ফোনে আছে,

রিতু ফোন টা বুকে ব্লাউজ এর নিচে রাখছিলো ফোন বের করা দেখে নীল হা করে তাকিয়ে আছে,

রিতু- এই গাধা এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো,

নীল- এত বড় মোবাইল কেমনে ছিলো ঐখানে,

রিতু- চুপ।

রিতু আর নীল লুডু খেলা শুরু করলো,

এমন সময় দরজায় ঠকঠক, এত রাতে কে আসলো,

রিতু উঠে দরজা খোলে দেয়, দরজায় দাড়িয়ে আছে একদল পুলিশ,
রিতু মোটেও ভয় পায় নেই পিছনে থাকা নীল ভয় পেয়ে যায়,
রিতু ভয় পাই নাই কারণ রিতু নিজেই পুলিশ,

রিতু- এত রাতে আপনারা,

পুলিশ - আপনি কে?

রিতু- আমি এই বাড়ির বউ।

পুলিশ - আমাদের নীল মাহমুদ  কে দরকার,আমাদের সাথে থানায় যেতে হবে,

রিতু- সকালে যাবে এখন আপনারা আসতে পারেন,
বলে রিতু দরজা দিতে যাবে কিন্ত পুলিশ দরজায় লাথি মারে,

রিতুর রাগ হয়, কিন্ত পুলিশ জানে না রিতু কে?
কিন্ত রাগ কে কন্ট্রোল করে বলে ড্রইং রুমে অপেক্ষা করেন আমি নীল কে নিয়ে আসছি,

পুলিশ গিয়ে বসে আছে ড্রইং রুমে পুলিশ ভাবছে হয়তো কিছু দিবে,

কিন্ত রিতু ৫মিনিট পর বের হয় রিতু
সোফায় বসতেই একজনের ফোনে কল আসে,

ফোন কেটে দিয়েই রিতুকে গিয়ে বলে সরি ম্যাম, আমাদের ভুল হয়ে গেছে,
আপনি স্যার কে বলে দেন চাকরি টা যেনো থাকে,
প্লিজ ম্যাম বলতে বলতে পা ধরে ফেলে রিতুর,
রিতু বলে আচ্ছা ঠিক আছে যান এবার,

রিতু পরেরদিন সকালে নীল কে নিয়ে থানায় যায়,
ওসি আকবর বললেন, আমি যা জানি না নীল আপনার কি হয় কিন্ত একটা কথা বলতে হচ্ছে আমাদের ডিবি পুলিশের তথ্য অনুযায়ী নীলের বাবা মা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়নি তাদের হত্যা করা হয়েছে,

রিতু- তার জন্য নীল কে কেনো এরেস্ট করবেন?

ওসি- দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে আমাদের সোর্স এর  ইনফরমেশন অনুযায়ী নীল তার বাবা মা কে হত্যা করেছে,,

Post a Comment

Featured Post

পাখিটা বন্দী আছে সোনার খাঁচায়!

পাখিটা বন্দী আছে সোনার খাঁচায়! দূর বিদেশে বাণিজ্যে গিয়ে এক বণিক সেখানকার এক বনে বিশেষ একটি পাখির গান শুনে মুগ্ধ হলেন এবং পাখিট...

জনপ্রিয়

[blogger]

MKRdezign

Mohammod Sahidul Islam

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget