জনাব নাহিদ ইসলাম,
আপনাকে এখন আর "তুমি" সম্বোধন করা শোভা পায় না। আপনি একটা দলের প্রধান। বিশাল বড় দায়িত্ব। সে দিন এক প্রিয় ছোট ভাইর সাথে কথা হচ্ছিলো। সে এখন নামকরা রাজনীতিবিদ। প্রতিদিন টেলিভিশনে টকশোতে যাচ্ছে। পত্রিকাগুলো তাঁর সাক্ষাৎকার ছাপাচ্ছে। কথা প্রসঙ্গে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে
- কি বললে আপনি বিশ্বাস করবেন এনসিপির এই ছেলেগুলোর সবাই দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত?
সে আমাকে এই প্রশ্ন করেছে; কারন নিজেদের অড্ডায় আমি এত কিছুর পরও আপনাদের ডিফেন্ড করছিলাম। তো উত্তরে বলেছি
- যে দিন শুনবো নাহিদের নামে বাস্তবিক অর্থেই কোন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
সেই সাথে আরেকজনের নামও বলেছিলাম। ওপাশ থেকে সে প্রশ্ন করেছে
- কেন আপনি নাহিদের কথা বলছেন?
- কারন এই ছেলেটা মন্ত্রী থাকা অবস্থায় একবারের জন্য বিদেশ পর্যন্ত যায় নাই। কম বয়স। এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের ইউরোপ-অ্যামেরিকা দেখার ইচ্ছা এমনিতেই থাকে। আমি হলেও হয়ত একবার ঘুরে আসতাম। সে এই ইচ্ছা দমন করতে পেরেছে। তাছাড়া ছেলেটা এখন পর্যন্ত মোটামুটি বিতর্কের ঊর্ধে আছে।
ওপাশ থেকে ছোট ভাই হেসে বলছিল আপনি সহজ-সরল মানুষ। আমি আর কিছু বলি নাই। যদিও এনসিপির প্রতি আমার এক অর্থে মন উঠে গিয়েছিল সেদিন; যেদিন দেখলাম আপনাদের দলেরই কিছু পোস্টেড নেতা আমাকে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী বলেছেন!
খুব অবাক হয়েছিলাম সেদিন। কেন অবাক হয়েছিলাম জানেন?
কারন জুলাই আন্দোলনের সময় এই ট্যাগের সংস্কৃতি বাংলাদেশে আর থাকবে না; সেই প্রত্যাশা আমরা করেছিলাম। আন্দোলনের সময় আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর কারনে বিগত সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বলেছিল
- আপনি তো তারেক রহমানের এসাইনমেন্ট নিয়ে দেশে এসেছেন!
চিন্তা করা যায়? যাকে চিনি না, জানি না; কোন দিন কথা পর্যন্ত হয় নাই। যেই দলের সমালোচনা ৫ আগস্টের পর অনেক করেছি। সেই আমাকে কিনা তুলে নিয়ে গিয়ে বলা হলো- তারেক রহমানের লোক! এভাবেই সরকারগুলো উচ্ছনে যায়।
এরপর আপনারাও বানিয়ে দিলেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী! অতি ক্ষুদ্র একজন অ্যাক্টিভিস্ট; যার কাজ হচ্ছে যখন যে সরকারে থাকে; তাঁর সমালোচনা করা। আপনারা সেই সমালোচনাটাও নিতে পারলেন না। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসুক। দেখবেন কিভাবে সমালোচনা করছি।
যা হোক, আজ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটা পত্রিকা আপনার পিএসের নামে তথ্য-প্রমাণ সহ অভিযোগ করেছে- সে নাকি নগদের পুরো অফিস দখল করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে - চাইলেই কি যে কেউ নগদ দখল করতে পারে?
ধরেন ক, খ, গ কিংবা আপনার দলেরই ছোট কোন কর্মী কি পারবে নগদের অফিসে গিয়ে সি-ই-ও'র চেয়ারে বসতে? কিন্তু সেটাই করেছে আপনার পিএস। শুধু সেটাই না; তাঁর বউকেও নগদের অফিসে ঢুকিয়েছে লুটপাট করার জন্য!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে - আপনি কি আপনার পিএসের বিচার চাইবেন? আপনার তো উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে পুরো জাতিকে জানানো- যদি সে অপরাধী হয়, তাঁর যেন বিচার হয়। এত ঘণ্টা পার হয়ে গেল; কেন আপনি চুপ করে বসে আছেন?
পুরো ফেসবুক সয়লাব হয়ে গেছে এই খবরে। বর্তমানে নামকরা রাজনীতিবিদ ওই ছোট ভাই একটু আগে ফোন করে বলেছে
- কি এখন কী বলবেন?
আমি আর কিছু বলতে পারি নাই। আপনারা জুলাইকে বিক্রি করে দিয়েছেন। নগদে ক্ষমতা পেলে যা হয়, সেটাই হয়েছে।
সোর্স: আমিনুল ইসলাম
Post a Comment