ইউনুস যাত্রাপালা শেষ, শেষাঙ্ক ওয়াকারের হাতে
ডঃ ইউনুসের পদত্যাগ একটি কাঁচা চিত্রনাট্যের যাত্রাপালা বলেই মনে হচ্ছিল। প্রহারেণ ধনঞ্জয় ছাড়া তিনি যাবেন না। সামরিক বাহিনী বাধ্য না করলে পদত্যাগ তিনি কেন করবেন? ক্ষমতায় টিঁকে থাকার তার উদ্দেশ্যগুলি পূর্ণ হয় নি। সেটা বলব, তার আগে একটা দানবের গল্প শোনাই।
দানবের গল্পঃ
পাকিস্তান হওয়ার পর থেকেই একটা ন্যারেটিভ ছড়ানো হয়েছিল। তা হল ভারত হিন্দু দেশ, কাফেরদের দেশ ও আমাদের শত্রু। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া ভারতে সাড়ে চার কোটি মুসলমানদের মধ্যে মাত্র নব্বই লক্ষ পাকিস্তানে গেল। তিন কোটি ষাট লক্ষ মুসলমান ভারতে থাকলেন। ভালভাবে বসবাস করছেন তারা। অথচ দ্বিতীয় ন্যারেটিভ ছড়ানো হল। মুসলমানরা ভারতে অত্যাচারিত। তখন রীল বা এআই ছিল না। কিন্তু প্রচার ছিল। এরপরে ছড়ানো হল তৃতীয় ন্যারেটিভ। হিন্দু ভাগাও। সম্পত্তি দখল করো।
শুধু তাই নয়। যে কোন বঞ্চনার জন্যে ভারতকে দায়ী করা হত। কী পশ্চিমে কী পূর্বে। কিন্তু ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান ভারতের দরদী রূপ দেখলো। তাতে কী! পাকমনন রাতারাতি মোছা যায়? আবার শুরু হল ভারতকে দানব হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মকে চেনানোর পালা। রাজনৈতিক দলগুলি এই সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগালো। তাদের মূলধন হল ভারত বিরোধিতা।
শেখ হাসিনার সময়কালঃ
শেখ হাসিনা দেশের ভিতরে তিনি বুলডোজার চালিয়েছেন নিশ্চয়ই, নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছেন অবশ্যই, জুলাই আন্দোলন সম্পর্কে অবান্তর কথা বলে সংঘবদ্ধ হতে দেওয়ার দায় তারই, ছাত্রদের ওপরে গুলিচালনার মত নৃশংস সিদ্ধান্ত তার মন্ত্রীসভার, এগুলি স্বীকার করে বলা ভালো যে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যে ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার ক্ষমতা রাখতেন। তিনি বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে পাক সংসদে বাংলাদেশকে উদাহরণ করে আলোচনা হত। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার যখন ৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার ছিল ২০.৮৮ বিলিয়ন ডলারের।
ভারত বাংলাদেশ থেকে নিয়েছে, দেয় নি কিছু, এই প্রচার বাংলাদেশে আছে। সেগুলি যে কত বড় মিথ্যা তার উদাহরণ দেওয়া যাক।
১) বানিজ্য ঘাটতি
ভারত থেকে বাংলাদেশে ২০২৩-২৪ এ ৯০০ কোটি ডলারের পন্য গেছে। বিদ্যুৎ, ডিজেল, এবং তুলা ছিল বাংলাদেশে মূল আমদানির ৮২ শতাংশ। তা ছাড়া ভোজ্য তেল, গম, চাল, চিনি, এবং ডাল জাতীয় খাদ্যশস্য ছিল ১৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য এবং আসবাবপত্র ছিল মূল পণ্য।
ভারত থেকে তুলা যেত। সেই তুলায় পোশাক তৈরি করে ভারতসহ বহির্বিশ্বে রপ্তানি করে বাংলাদেশ তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারের ৮০ শতাংশ অর্থ আয় করত। বহির্বিশ্বে রফতানির জন্যে খুব কম মূল্যে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নিত বাংলাদেশ। এই তুলা আমদানি বন্ধ করে ইউনুস দেখাতে চাইছে বানিজ্য ঘাটতি কামাচ্ছেন তিনি। ভারত বন্ধ করেছে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা তুলে নিয়েছে। বন্ধ করেছে স্থল বন্দর। বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক নির্মাতাদের সংগঠন বিকেএমইএ জানিয়েছে, ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে স্থগিত হয়ে গিয়েছে উৎপাদন। গত ১০ মাসে স্থলপথে ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছে। চিঠি দিয়ে তারা বাংলাদেশ সরকারকে বলেছে, ভারতকে অনুরোধ করুন। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ-এর একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, স্থলবন্দর বন্ধ করার ফলে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ আমদানিতে কোপ পড়েছে। ভারত কি নিষেধাজ্ঞা তুলবে? ইনির্বাচিত সরকার থাকলে কখনই নয়।
২) বিদ্যুৎ আমদানি
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ শিল্প পুরোপুরি ভারতের ওপরে নির্ভরশীল। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন উপযোগী কোন কয়লা খনি নেই। বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন উপযোগী কোন নদী নেই। পরমানু বিদ্যুৎ অবকাঠামো অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ, ইউরেনিয়ামও নেই। বাংলাদেশে বেশিরভাগ বিদ্যুৎ তৈরি হয় ডিজেল পুড়িয়ে যার ৮২ % ভারত থেকে যায়। ভারত নিজে পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ নয়। অপরিশধিত তেল কেনে রাশিয়া, ইরান ও অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্য দেশ থেকে। অথচ বাংলাদেশকে দেয় ও তাও নিয়ন্ত্রিত মূল্যে। নেপাল থেকে যে জলবিদ্যুৎ তারা কেনে তা যায় ভারতের গ্রিড দিয়ে এবং তাও বিনামূল্যে। এছাড়া আদানি বিদ্যুৎ আছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আজকের উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা ও ভারতের সৌজন্যে। ভারত পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ নয়, বলে ডিজেল সাপ্লাই বন্ধ করতে পারে। গ্রিড বন্ধ করতে পারে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার খাতিরে। আদানি বিদ্যুৎএর ওপর সরকারী হাত নেই। কিন্তু যে দেশের গরমে ২৪০০০ মেগাওয়াট চাহিদা সেখানে আদানির ১৪০০ মেগাওয়াট দিয়ে কী হবে! বাইরে থেকে ডিজেল আমদানি করতে হলে বাংলাদেশের কত ডলার অতিরিক্ত গুনতে হবে তার হিসাব আছে?
৩) ফ্রিট করিডোরঃ
ভারত চেয়েছিল বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য উত্তর পূর্ব রাজ্যে পাঠাতে। পারস্পরিক বানিজ্যের তাতে উন্নতি হত। ভারত বাংলাদেশকে ছাড় দিয়েছিল উত্তর পূর্ব রাজ্যে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি করতে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব,ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্যর বাজার উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলি রাজা হয়ে উঠল। কিন্তু ইউনুস আসার পরে ফ্রিট করিডোরের গল্প শেষ। তিনি নিষেধাজ্ঞা জারি করলেম যে উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলিতে উৎপাদিত পণ্য জলপথে অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। ভারত ৫০ টি স্থলবন্দর বন্ধ করে দিল। নে ভাই, থাক তোরা তোদের কড়িডোর নিয়ে। ওদিকে কলকাতা হয়ে মিয়ানামার হয়ে জল ও তারপরে স্থলপথে কালাধন প্রকল্প নির্মাণ শেষ হলে অনেক কম খরচে উত্তর পূর্বে ভারতীয় পণ্য যাবে।
৪) ইন্টারনেটঃ
বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট নেই। তারা ইন্টারনেট সার্ভিস নেয় ভারতের থেকে। বাংলাদেশে ইন্টারনেটের খরচ ভারতের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় জলের দাম। এই ব্যবস্থা করেছিলেন শেখ হাসিনা । এমনকি রেলের অপটিকাল ফাইবার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের দ্রুততার স্থপতি তিনি। ইউনুস এসে স্টার-লিংককে আমন্ত্রণ জানালেন বাংলাদেশে। পরিস্কার এই যে ভারতের সার্ভিস চাই না। খুব ভালো। ভারতের একটি রাজ্যের সমান বাংলাদেশ। সেখানে ইন্টারনেট না দিলে ক্ষতি নেই। কিন্তু স্টার লিংক চালু হলে নেটের খরচ কমপক্ষে ৭ গুণ বাড়বে।
৫) জলচুক্তিঃ
তিস্তার মুখে এখন জল আসে ১০০ কিউসেক। ভাগাভাগির জন্য প্রয়োজন ১৬০০ কিউসেক। কিছুতেই যখন সম্ভর হয় নি তখন ভারত প্রস্তাব দিয়েছিল তিস্তা অববাহিকার জল বর্ষায় ধরে রেখে সমস্যার সমাধান হতে পারে এবং ২ কোটি ডলারের প্রকল্পের অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন শেখ হাসিনা যা ভারতকে সহজ কিস্তিতে শোধ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু ইউনুস এসে সে প্রকল্প চিনকে দিয়ে দেন। ভালই হল, চড়া সুদে ঋণ শঢ করবে বাংলাদেশ।
গঙ্গাজলচুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের প্রচুর ক্ষোভ। ভারত জল ছাড়ে না। ৪০ হাজার কিউসেক প্রতিশ্রুতি থাকলেও ৩০ থেকে ৩৪ হাজার কিউসেকের জল বাংলাদেশ পায়। কম জল এখন আসে বলে কম পায়। কিন্তু শেখ হাসিনার দৌত্যে সম্পূর্ণ পলিমাটি মুক্ত জল বাংলাদেশ পায়। ২০২৬ এ গঙ্গাজল চুক্তি শেষ। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নদী চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এবারে ভারত সোজা পঞ্চাশঃ পঞ্চাশ অনুপাতে যাবে। ১০৮ টা লকগেটের ৫৪ টা লকগেট খুলে দেবে এবং বাংলাদেশ পাবে পলিমাটিযুক্ত জল। ফলে পদ্মায় ড্রেজিং করতে যে খরচ হবে ও অবকাঠামো স্থাপনের প্রয়োজন হবে তাতে ঠেলা বুঝবে বাংলাদেশ।
৬) সন্ত্রাসবাদে ‘জিরো টলারেন্স-
বাংলাদেশের এই নীতিতে ভারত এর ডাইরেক্ট বেনিফিশিয়ারি। শেখ হাসিনার আমলে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম প্রায় শূন্য হয়ে ছিল। সীমান্তে সামরিক বাহিনী মোতায়েন কম করা গিয়েছিল। কিন্তু ইউনুস এসে হাজারের ওপর সন্ত্রাসীদের জেলমুক্ত করেছেন। ফলে ইসলামী স্লিপার সেলগুলি আবার সক্রিয় হয়েছে। ফলে ভারত ভিসা বন্ধ করেছে। পুশ ব্যাক চালু করেছে। সীমান্তের সামরিক ঘাঁটিতে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে। এরপরে সীমান্তরেখায় কার্ফু প্রথমে রাতে ও পরে দিন-রাতে চালূ করবে। তখন সীমান্ত হত্যা বাড়লেও বাংলাদেশের কিছু বলার থাকবে না।
আরো অনেক বিষয় আছে যা শেখ হাসিনা তার সময় ভারতের থেকে আদায় করেছিল।
ইউনুসের মিশন কীঃ
১) ইউনুস চিরকালই ভারত বিরোধী। তার বইয়ে সেটা স্পষ্ট। বাংলাদেশের একাংশের ভারতবিরোধী অনুভুতিকে মূলধন করে তিনি দেশের স্বার্থ দাড়িপাল্লায় তুলছেন। একদিকে তিনি সেভেন সিস্টার্স ও চিকেন নেক নিয়ে যত্রতত্র কথা বলে ও একের পর এক ভারত বিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে দেশে হিরো হতে চাইছেন, ওদিকে নরেন্দ্র মোদি’র সাক্ষাৎ প্রার্থনা করে চিঠি লিখছেন। সেটা দেশের ব্যবসায়ীদের বার্তা দেওয়া যে এই দেখো, আমি চাইছি, মোদি সময় দিচ্ছেন না।
২) আমেরিকার ডেমোক্র্যাট তথা ক্লিন্টন পরিবারের সাথে ইউনুসের দহরম মহরম ও ট্রাম্পের তার প্রতি অপছন্দ সর্বজনবিদিত। ট্রাম্প জেতায় তার হিসাব উলটে গেছে। ট্রাম্প বানিয়া ও আমেরিকার স্বার্থবাদী লোক। বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশ্যে ভারতের দায়িত্ব বলে খালাস। কিন্তু যখনই তারা হিউম্যান করিডোর চাইল ইউনুস উদ্বাহু হয়ে রাজী হলেন। চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক টার্মিনাল তিন পশ্চিমী কোম্পানিকে লিজ দিতে রাজী হলেন। এতে যে বাংলাদেশের সার্বভৌমতা ক্ষুণ্ণ হবে সেটা তিনি বুঝলেন না। বলতে হল সেনা প্রধানকে।
৩) দেশের মানুষের পয়সায় বিমান ভাড়া করে চিন গেলেন। সেখানে কার্যকরী কোন সুবিধা আদায় করতে পারলেন না। বরং লালমনিরহাট বিমান বন্দর চিনের হাতে তুলে দেবেন অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে, সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেন। এটুকু বুঝলেন না যে চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর ও মিয়ানামারে চিনের বিনিয়োগ এখন বিশ বাঁও জলে। দু’জায়গায় ভারতকে চটিয়ে তারা এক ইঞ্চিও এগোতে পারবে না। লালমনিরহাট বিমানবন্দরে চিনের বিমান নামলেই আত্মরক্ষার অধিকারকে খাড়া করে বিমানবন্দরই উড়িয়ে দেবে ভারত।
৪) যে পাকিস্তান ১৯৭১ এ হত্যা ও ধর্ষণ চালিয়েছিল বাংলাদেশে। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশকে উদাহরণ করে তাদের সংসদে আলোচনা করত, সেই পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ গেল আমদানি প্রস্তাব নিয়ে। লাভ কী হল? অফিসিয়ালি জান গেল ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল এসেছে পাকিস্তান থেকে। তারপরে? ভক্কি। সাড়ে ছ’লক্ষ মেট্রিক টন চালের অর্ডার দিতে হল ভারতকে।
৫) ইউনুসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ ছিল। কর আরোপ করা হয়েছিল। মামলা ছিল বেশ কিছু। কর দেওয়া তো দূরের কথা, মামলা তুলে নিজের সংস্থার কর ২০২৯ সাল অবধি মকুব করে তিনি ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা করলেন।
ওয়াকারুজ্জামানের উদ্যোগঃ
১) বাংলাদেশের পুলিশ প্রায় নিস্ক্রিয়। সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায়। এটা সেনাবাহিনীর কাজ নয়। সেনাবাহিনী বুঝতে পারছে যে ইউনুস ভারতের সাথে যে শত্রুতার অবতারনা করেছে তার ফলাফল ভালো হবে না বাংলাদেশের পক্ষে। কাজেই তিনি চাইছেন নির্বাচিত সরকার যারা সরকার চালাবে আর তারা সেনানিবাসে ফিরে যাবে।
২) নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার – এই তিনটি কাজ নাকি এই অনির্বাচিত সরকারের করার কথা। নির্বাচন যে কোন কেয়ারটেকার সরকারের করা উচিৎ ৯০ দিনের মধ্যে। কিন্তু ইউনুস জানেন সে এখন নির্বাচণ হলে তার অপোগন্ড বালকের দল এনসিপি ও তার মদতপুষ্ট দল জামাত জিতবে না। কাজেই পিছোতে থাকো নির্বাচন।
৩) বিচার বিভাগ সরকারের অধীন। কাজেই সেখানে পূর্বতন সরকার নিয়োজিত বিচারপতিদের সরানো শেষ। বাংলাদেশের আদালত এখন পুরোপুরি মাদারীর খেলার প্রাঙ্গন হয়ে গেছে। ডিম ছোঁড়াছুঁড়ি, অভিযুক্তদের চড়থাপ্পর মারা, উকিলদের গুন্ডাগিরি সব চলছে। সংস্কার যে কোথায় সামান্য হয়েছে তা পরিস্ফুট নয়। এখানেই সেনাবাহিনীর সাথে ইউনুসের সংঘাত।
৪) ওয়াকারুজ্জামানের হাতে সময় নেই। বাঘের পিঠে চড়ে বসেছে সে। বাংলাদেশ আবেগী দেশ। বাস্তববোধের ধার ধারে না তারা। গতকাল যারা শাসক দল্কে সোচ্চারে সমর্থণ করেছিল, আজ তারা ইউনুসী। পুরোপুরি গন-হিস্টিরিয়ায় ভোগা দেশ। সংবাদ মাধ্যম সমধর্মী। সেনা অভ্যুত্থান না চাইলেও ইউনুসের পদত্যাগ তাকে নিশ্চিত করতে হবে। না’হলে সে উড়ে যাবে। তাকে মনে রাখতে হবে যে তিনি কোন দেশের সাহায্য পাবেন না। তিনি সেফ প্যাসেজ নিয়ে বাংলাদেশের ভবিতব্য ভাগ্যের হাতে ছেড়ে কেটে পড়তে পারেন। অথবা বাংলাদেশের গেম চেঞ্জার হতে পারেন। সিদ্ধান্ত তার।
সোর্স: অমিত গোস্বামী
Post a Comment